কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দায় উপাচার্যের বলে দাবি করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা বসতে অপারগতা প্রকাশ করেছে শিক্ষক সমিতি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট সমাধানকল্পে আলোচনা করতে গত ২৪ মে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। চিঠিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারিকে উপাচার্যের অস্থায়ী কার্যালয়ে(৩১২নং রুমে) আলোচনার জন্য আহবান করা হয়।
রবিবার (২৬ মে) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান স্বাক্ষরিত ও মেইলে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে তারা বলেন, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার পূর্বশর্ত হলো বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখা। গত ৩০ এপ্রিল ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য (হলসমূহে অস্ত্র ঢুকেছে, প্রচুর টাকা দেওয়া হচ্ছে ইত্যাদি) উপস্থাপনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট সদস্যগণকে প্রভাবিত করে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করেছেন উপাচার্য নিজেই। তবে শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে হলে অবস্থান করছে। যেহেতু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করেছেন উপাচার্য, সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা না বন্ধ রাখার ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির কোন দায় নেই এবং এ সংক্রান্ত কোনো নির্বাহী দায়িত্বও শিক্ষক সমিতির উপর বর্তায় না।
তারা আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই আমরা ক্লাসে ফিরেছিলাম। কিন্তু গত ২৮ এপ্রিল উপাচার্যের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসী, হত্যা ও খুনের মামলার আসামিরা শিক্ষকদের উপর প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে ন্যাক্কারজনক হামলা পরিচালনা করে। উপাচার্য নিজেও এই হামলায় অশগ্রহণ করেছেন। নজিরবিহীন এ সন্ত্রাসী হামলা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের সকল শিক্ষক সমাজের জন্য মর্যাদাহানী ও গ্লানিকর। তার প্রেক্ষিতেই শিক্ষকগণ উপাচার্যের পদত্যাগ/অপসারণের একদফা কর্মসূচি পালন করছে।
“শ্রেণিকক্ষসহ ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং প্রশাসন সন্ত্রাসমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সার্বিক পরিবেশ সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে শিক্ষক সমিতি মনে করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবক হিসেবে উপাচার্যের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশের সুরক্ষা বিধান এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, তিনি সকল সঙ্কটের মূল হোতা। নিরাপদ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বিক অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় সকল শিক্ষক সচেতনভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।” যুক্ত করেন। তারা বলেন, উপাচার্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অপকৌশলের মাধ্যমে তার বিভিন্ন গোপন অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের উপর বর্বরোচিত হামলা এবং মর্যাদাহানীর সুষ্ঠু বিচার এবং শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নীতিভ্রষ্ট, বিবেকবর্জিত মাননীয় উপাচার্যের সাথে কোন ধরনের প্রহসনমূলক গোপন অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে শিক্ষক সমিতি বাহন হিসেবে কোনো ভূমিকা পালন করবে না।