Top-1জাতীয়সারাদেশ

নকলায় বন্যার পানিতে মাছ ধরতে জাল বেচাকেনার ধুম: বিক্রিও বেড়েছে দ্বিগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্যার থইথই পানিতে মাছ ধরতে নানান রকম জাল (ফাঁদ) বেচাকেনার ধুম পড়েছে শেরপুরের নকলা উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে পৌর শহরের সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। নানা বয়সী মানুষ ভ্রাম্যমাণ জালের দোকানে ভিড় করছেন। যে যার চাহিদা অনুযায়ী জাল কিনছেন। বিক্রিও বেড়েছে দ্বিগুন।

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুর। পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চারটি উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতি ও শ্রীবরদী। নকলা উপজেলার গনপদ্দি, নকলা, উরফা ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে মৎস্য চাষীদের মাছের ঘের ও কয়েকশ ছোটবড় পুকুর। এসব মাছ ছড়িয়ে গেছে বন্যার পানিতে। নতুন পানি হওয়ায় অনেকের বেড়েছে দুর্ভোগ আবার অনেকেই মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কেউ বা রাস্তায় আবার কেউ মাঠে বা বাড়ির আঙ্গিনায় বিভিন্ন রকম জাল (ফাঁদ) পেতে এই মাছ ধরছেন মাছ ধরছেন।

যার ফলে বাজারে মাছ ধরার জালের (ফাঁদ) চাহিদা বেড়েছে। এসব জালের মধ্যে রয়েছে ঝাঁকি জাল, কনুই জাল, কইয়া জাল, ম্যাজিক জাল, বুচনা জাল, ভেসাল জাল, হাত জাল, কুঁড়োজাল, ব্যাগ জাল, ভাসা জাল, ঠেলাজাল অন্যতম। বাজারে কারেন্ট জাল বেচাকেনা লক্ষ্য করা যায়নি। তবে অঞ্চলভেদে এসব জালের নামের ভিন্নতা রয়েছে। বেশিরভাগ জাল বিক্রেতা অন্য উপজেলা থেকে এসেছেন। জাল একটু কম দামের পাওয়ার আসায় বাহিরের উপজেলার ক্রেতাদেরও উপস্থিতি মিলেছে।

জাল কিনতে আসা শেরপুর সদর উপজেলার চরজঙ্গলদী এলাকার বাসিন্দা আলামিন বলেন, বন্যার পানিতে প্রচুর মাছ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের মতো আমিও বাজারে এসেছি। ৩ হাজার ৭শ টাকা দিয়ে হাতে বুনা এক বছরের পুুরাতন ঝাকি (তৌরা) জাল কিনলাম। নকলা বাজারে জালের পরিমান বেশি উঠায় একটু কম দামেই পাওয়া যায়। এই জালটি নতুন কিনলে প্রায় ৮ হাজার টাকা লাগতো। চরকৈয়া এলাকার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন বলেন, এ বছর বন্যায় সব পুকুরের মাছ বেরিয়ে গেছে, তাই বন্যার পানিতে সব জায়গায় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আমার কইয়া জাল পাতা আছে, আরও একটি কিনতে বাজারে এসেছি।

ফুলপুর উপজেলার কাশিগঞ্জ এলাকার জাল বিক্রেতা ফজলুল হক বলেন, আমরা সারাবছর জাল বুনাই (তৈরি করি)। পানি না থাকায় বিক্রি করতে পারি না। গত কয়েক বছর যাবৎ একই অবস্থা। এবার শেরপুরে নতুন পানি এসেছে। তাই চাহিদাও বেড়েছে। ফুলপুর থেকে নকলা বাজারে এসেছি ঝাকি (তৌরা) জাল বিক্রি করতে। হাতে বুনানো নতুন একটি জাল সর্বোচ্চ ১০ হাজার ও সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকি। তবে জালের দাম অনেকটা কত হাত সেটার উপর নির্ভর করে। একেকদিন একেক বাজারে গিয়ে মাছ ধরার এসব জাল বিক্রি করে থাকি। এ বছর ব্যবসা ভালো যাচ্ছে। ঝাকি জালের চাহিদা গ্রাহকদের কাছে বেশি।

ইজারাদার অমিত হাসান রূপক বলেন, নকলা বাজারে জালের তেমন কোন চাহিদা ছিল না। নতুন পানি আসার কারনে এবার জালের চাহিদা বেড়েছে। নকলায় সোমবার ও বৃহস্পতিবার হাটের দিন। প্রতি হাটে এখন ৭০ থেকে ৮০টি জাল কেনাবেচা হয়। তবে ক্রেতা বিক্রেতা উভয় তাদের সাধ্যমতস জমা খরচ দেন। ক্রেতা বিক্রেতারা যেন নিরপদে বাজারে জাল বেচাকেনা করতে পারে সেজন্য বাজার কমিটির পক্ষ থেকে সহযোতিা করা হয়।

desherpotrika
the authordesherpotrika

Leave a Reply